সন্তানকে পৌঁছে দিন তার স্বপ্নের ক্যারিয়ারে

Wishlist Share
Share Course
Page Link
Share On Social Media

About Course

প্রিয় অভিভাবক,আপনি কি আপনার প্রিয় সন্তানকে ভবিষ্যতে একজন সামরিক অফিসার হিসেবে দেখতে পছন্দ করেন? তবে এই লেখাটি আপনার জন্য।

ভালো ফসল উৎপাদনের জন্য উর্বর মাটি, অনুকূল আবহাওয়া আর পর্যাপ্ত আলো,পানি ও বাতাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও আপনার জমিতে ঠিক কি ফসল ফলবে তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে সে জমিতে বপন করা বীজের উপর। পরিপুষ্ট ও সঠিক বীজই নির্ধারণ করে দেয় জমিতে ধান ফলবে নাকি আলু, সেখানে কাঁঠাল ধরবে নাকি সরিষা জন্মাবে। আবাদের জন্য সঠিক বীজ নিশ্চিতভাবেই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ তবে ভালো ফসলের সফলতা পেতে হলে আপনাকে আলাদা ফসলের বীজের জন্য নির্দিষ্ট চাষাবাদ পদ্ধতিও জেনে নিয়ে তা অনুসরণ করতে হবে। স্বপ্নই শিশুদের অন্তরে জীবন বৃক্ষের সফলতার বীজ, তাই শিশুর মনোভূমিতে যে স্বপ্ন রূপি বীজ বপন করতে চান সে স্বপ্নের বপন পদ্ধতির জ্ঞান ও পরিচর্যার দায়িত্ব নিয়ে আপনাকেই এগিয়ে আসতে হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে অত্যন্ত ভাল ফলাফল করেও প্রতি বছর অসংখ্য পরীক্ষার্থী সামরিক বাহিনীতে অফিসার পদে যোগদানের জন্য নির্দিষ্ট মূল্যায়ন পরীক্ষায় বিফল হয় যার অর্থ, ভালো নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও সেসব পরীক্ষার্থীদের একটা বড় অংশের শারীরিক ও মানুষিক সক্ষমতার অনেক সুচকে তারা উপযুক্তভাবে গড়ে ওঠেনি। প্রত্যাশীদের মধ্য হতে কেও কেও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার উপায় হিসেবে নানা কোচিং সেন্টারে ছুটে বেড়ায় যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোন সুফল বয়ে আনে না কারণ এইসব পরীক্ষাতে সুদক্ষ পরীক্ষকগণ এমন নির্দিষ্ট কিছু মৌলিক গুনাগুণকে অনুসন্ধান করেন যাকিছু পরীক্ষার্থীদের মৌলিক চরিত্রের অংশ হলেই কেবল উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব। তাই, এমন একটি বিশেষায়িত পেশার জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে শিশুদের জীবন যাপন পদ্ধতির প্রতিই গুরুত্ব দেওয়া সব থেকে কার্যকর উপায় বিধায় আপনার সন্তানকে নিচের বিষয়গুলোতে দক্ষ করে গড়ে উঠতে সাহায্য করুণ।

১। শিশুকাল হতেই পৃথিবীর বিভিন্ন জাতির সামরিক বাহিনীর সাফল্যের উপর উপর লেখা আবেগপূর্ণ গল্পগুলো তাকে বলুন। বিখ্যাত মানুষদের সফলতার পেছনে যেসব শ্রম ও অধ্যবসায় জড়িত ছিল সেসবের গল্প বলুন। পরিশ্রম আর বীরত্বের গল্পগুলো তাকে পড়তে ও সে সম্পর্কে জানতে উৎসাহ দিন। পরিবারের সকলেই এমন সব বিষয় নিয়ে শিশুটির সম্মুখে আলোচনা করুণ যেন অবচেতনায় বীরত্বের প্রতি শিশুটির অন্তরে আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। এডভেঞ্চার বিষয়ক গল্প, অজানাকে জানার গল্প, শিকার কাহিনী, মহান যোদ্ধাদের জীবনী, দেশপ্রেমের গল্পগুলো শিশুদের অন্তরে স্বপ্নের বীজ বুনে, তাই নিজ গৃহে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করুণ যেন শিশুটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার মননশক্তি নিয়ে বড় হয়। একটা শিশু তার মা বাবাকেই সবথেকে বেশি ভালোবাসে আর তাই মা বাবার আনন্দ শিশুর জন্য সবথেকে শক্তিশালী অনুপ্রেরণা হিসেবে ক্রিয়াশীল হয়। মা বাবা হিসেবে শিশুটিকে তাই সমাজ জীবনে ন্যায় প্রতিষ্ঠার বীর যোদ্ধা হতে অনুপ্রাণিত করুণ।

Action Step:
আপনার শিশুর বয়স ৭ বছর বা ততোধিক হলে তাদেরকে ইসলামের ইতিহাসে উল্লেখিত মহান যোদ্ধাদের গল্পগুলোর মধ্যে হযরত ওমর বিন খাত্তাব, হযরত আলি ইবনে আবু তালিব, খালিদ বিন ওয়ালিদ, একাদশ শতকের মুসলিম সেনাপতি সালাউদ্দিন আইয়ুবি, বাইবারস, ফাতেহ মেহমেদ, ওমর মুক্তার প্রমুখ যোদ্ধাগনের জীবনী পড়তে ও জানতে উৎসাহিত করুণ।আপনার সন্তানের বয়স যদি ১২ বছরের ঊর্ধ্বে হয় তবে তাদেরকে সাথে নিয়ে বিনোদনের অংশ হিসেবে মনো-গঠনমূলক মুভি কিংবা ডকুমেন্টরি দেখুন। এক্ষেত্রে The lion of Desert, An apple from the Heaven, Bridge on the River Kawaii, Children of Heaven, Color of Paradise, Dipu No-2, Tomorrow, The Karate Kid, মুভিগুলো উপকারী হতে পারে। অভিভাবক হিসেবে আমাদের একথাও মনে রাখা দরকার যে, ভাল গল্পগুলো যেমন শিশুদের অন্তর গঠন করে তেমনি খারাপ গল্প, মন্দ কথা কিংবা ঐরূপ কবিতা, গান বা কাহিনী গুলো তাদের অন্তরে বিষের মত ই ক্রিয়া করে , তাই মন্দ গল্প, ছবি বা ভিডিও দৃশ্য হতে তাদেরকে রক্ষা করার কৌশল গ্রহণে সচেতন থাকুন।

২। যা কিছুই হোক শিশুর সাথে স্বাভাবিক ব্যবহার ও সদাচার করুণ। ছোট ছোট ভুল থেকে শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে তারা যেন নিজেকে সংশোধন করতে পারে সেক্ষেত্রে তাদের সাহায্য করুণ। শিশুদের নিজের ছোট ছোট কাজগুলো যেন তারা নিজেরাই সম্পন্ন করে সে অভ্যাসে তাদের অভ্যস্ত করুণ। যে কাজ তারা নিজেই করার সামর্থ্য অর্জন করেছে তা অন্য কেও সম্পন্ন করে দেওয়া হতে বিরত থেকে শিশুদের আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করুণ।

Action Step:
অভিজ্ঞতা না থাকায় শিশুরা অনেক কিছুতেই ভুল করে এবং শিশুরা ভুল করবে এটাই স্বাভাবিক তাই শিশুদের ভুল নিয়ে বিরক্ত হবেন না। শিশুর বয়স যদি ৭ বছর বা ততোধিক হয় তবে তাকে নিজের খাবার প্লেট নিজেই ধুয়ে রাখা, নিজের জুতা পরিষ্কার করা, ব্যবহার্য কাপড় ও বিছানাপত্র গুছিয়ে রাখা, অতিথিকে আপ্যায়ন করার মত কাজগুলো করার অভ্যাসে অভ্যস্ত করুণ। তাদেরকে পারিবারিক কিছু কিছু কাজে নিযুক্ত করুণ যেন তারা দায়িত্ব গ্রহণ করতে সাহসী হতে পারে।

৩। দিনরাত পড়ালেখা না করলে পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করবে না – এমন ভয় হতে বেড়িয়ে এসে তাকে বরং মনোযোগ দিয়ে অধ্যয়ন করার প্রতি আগ্রহী করে তুলুন। বাবা মা হিসেবে সন্তানের সাথে আন্তরিক সময় ব্যয় করুণ; তাদেরকে নিয়ে ঘুরে বেড়ান, তাদের সাথে গল্প করুণ। বাসার সকলকে নিয়ে একসাথে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুণ।

Action Step:
শিশুর পড়ালেখার জন্য নিরিবিলি পরিবেশ গঠন করুণ। কোন শব্দ,অযাচিত কোন গন্ধ,কোলাহল, ইত্যাদি থেকে শিশুর পড়ালেখার পরিবেশকে সংরক্ষণ করুণ। অভিভাবক হিসেবে নিজ গৃহের পরিবেশকে এমনভাবে সংরক্ষণ করুণ যেন শিশুটি পড়ার সময়ে পড়ালেখা ব্যতীত অন্য কিছুর প্রতি আকর্ষণ অনুভব না করে। পড়ালেখা শেষ হলে তাদেরকে নিয়ে একসাথে খেলাধুলা কিংবা খাবার খাওয়া অথবা গল্প করার মধ্য দিয়ে কিছু সময় অতিবাহিত করুণ। গৃহ প্রত্যেকের কাছে পবিত্র বাসস্থান তাই নিজ গৃহ কে হৈ চৈ কিংবা গান-বাজনার স্থান বানানোর পরিবর্তে শান্ত পরিবেশ সুরক্ষার অভ্যাস আপনার শিশুর ব্রেইন ডেভেলপমেন্টের জন্য অধিক উপকারী।

৪। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম আমাদের মস্তিস্কের হিপোক্যাম্পাসের কার্যক্রমকে অধিক সক্রিয় করে নিওরজেনেসিস ঘটায় ফলে নতুন নতুন নিউরনের জন্ম হয় তাই,আপনার শিশুটিকে আউটডোর খেলাধুলায় আগ্রহী করুণ। প্রতিদিন কমপক্ষে ১ ঘণ্টা এমন খেলাধুলায় অভ্যস্ত করুণ যেন তার শারীরিক ও মস্তিষ্কের গঠন সুঠাম হতে পারে। সুষম খাবার আর রাত ১০ টার মাঝেই ঘুমের অভ্যাস আপনার সন্তানের শারীরিক যোগ্যতা বিশেষভাবে বৃদ্ধি করবে এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে অধিক শক্তিশালী করবে।

Action Step:
শিশুটিকে প্রতিদিন ফুটবল, ক্রিকেট, বা অন্য যে কোন আউটডোর খেলাধুলা কিংবা স্পোর্টসে অংশ গ্রহণ করার সুযোগ করে দিন। প্রয়োজনে তাদের সাথে নিজেও সেসব খেলাধুলায় অংশ নিন। শিশুরা আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ ইনভেস্টমেন্ট তাই শিশুদের সাথে সময় দেওয়াকে অন্য যে কোন কাজের বিপরীতে অগ্রাধিকার দিন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ও গভীর ঘুমের মাঝে আমাদের শরীর তার প্রয়োজনীয় পেশি গঠন, সৃতিশক্তি বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা ও সকল প্রকার ক্ষয়পূরণ বা মেরামতের প্রয়োজনীয় কাজগুলো করে থাকে। গভীর ঘুমের মাঝেই কেবল আমাদের শরীর হতে ক্ষতিকর দূষিত ও টক্সিন কেমিক্যালগুলোর অপসারণ চলে তাই শিশুটিকে ৭ হতে ৮ ঘণ্টার গভীর ঘুমের অভ্যাসের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করুণ। শিশুদের সাহায্য করতে নিজেরাও রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়ার অভ্যাস করুণ।

৫। শিশুদের সামনে ভয়, সংশয়,অসম্মান, অমর্যাদা বিষয়ক কথা, কাহিনী, ও আলোচনা হতে বিরত থাকুন।

Action Step:
ভুতের গল্প, হরর কাহিনী, বীভৎস কোন বর্ণনা শুনা বা দৃশ্য দেখা হতে শিশুদের রক্ষা করুণ। শিশুদের সামনে বড়দের কোন ভুল নিয়ে সমালোচনা করবেন না। বাসায় কোন গৃহপরিচারিকা থাকলে তাদেরকেও সম্মান করার অভ্যাসে অভ্যস্ত করুণ আপনার সন্তানকে। সুযোগ মত আপনার সন্তানকে ছোটবেলাতেই সাঁতার শিখিয়ে দিন যেন পানি ভীতি হতে সে মুক্ত থাকে।

৬। বন্ধুদের মহলে সে যেন অন্য সকলের প্রিয়পাত্র হতে পারে সে লক্ষ্যে শিশুটিকে ভাল আচার আচরণের শিক্ষা দিন। সে যেন ছোটবেলা থেকেই বন্ধুদের অনুপ্রাণিত করার কৌশল আয়ত্ত করতে পারে সে বিষয়ে তাকে আগ্রহী করে তুলুন।

Action Step:
বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক গঠন ও সেসব সম্পর্ক রক্ষা করার গুরুত্ব নিয়ে সন্তানের সাথে খোলামেলা আলোচনা করুণ। শিশুটির বন্ধু কারা, সেসব বন্ধুদের কি কি গুনাগুণ রয়েছে এবং তারা কি পছন্দ বা অপছন্দ করে সেসব নিয়ে কথা বলুন। কারও সাথে মতবিরোধ হলে তা কিভাবে মিটিয়ে ফেলতে হয় কিংবা কিভাবে অন্যদের অনুপ্রাণিত রেখেও নিজের মতামতকে প্রতিষ্ঠিত করা যায় তা নিয়ে গল্প করুণ।মানুষের জীবনে সম্পর্কগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুটিকে অন্যদের সাথে ভালো সম্পর্ক রক্ষা করার বিষয়ে অভ্যস্ত করুণ।

৭। যে কোন বিষয়ে গুছিয়ে কথা বলার অভ্যাস করা অত্যন্ত জরুরী মানুষিক সক্ষমতা তাই শিশুকে নিজ বাসাতেই অন্য সকলের সামনে নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখার সুযোগ করে দিন। মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনুন এবং আরও প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয়ভাবে কথা বলতে তাকে আগ্রহী করে তুলুন।

Action Step:
শিশুটিকে কোন একটা গল্প বলার সুযোগ দিন। সকলেই আগ্রহী শ্রোতা হয়ে তার কথা শুনুন এবং গল্প শেষ হলে কিছু কিছু প্রশ্ন করে গল্পের যৌক্তিকতা উপস্থাপনে তাকে আগ্রহী করুণ। ভাল গল্প বলার জন্য তাকে পুরস্কার দিন। অন্য দিনের গল্পের বিষয় আগেই তাকে জানিয়ে দিন যেন সে কিছুটা প্রস্তুতি নিতে পারে।

৮। আপনার সন্তানকে আত্মসম্মানী মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে অনুপ্রাণিত করুণ। ভোগবিলাস শিশুদের জীবন-স্বপ্নকে দুর্বল করে দেয়, তাই সন্তানকে সুষ্ঠু মানুষিক গঠন নিয়ে গড়ে উঠতে তাদের মৌলিক প্রয়োজনগুলোকে গুরুত্ব দিন কিন্তু বিলাসী কোন কিছু পেতে তাদেরকে নিজের উপার্জন অবধি অপেক্ষা করার আত্মসম্মানের শক্তিতে শক্তিশালী করুণ।

Action Step:
শিশুদের সম্মান রক্ষা করুণ, কোন কারণেই তাদের মর্যাদার অবমূল্যায়ন করবেন না। ভালো কাজের প্রশংসা করুণ আর মন্দ কাজগুলো যে তাদের আত্মমর্যাদার জন্য ক্ষতিকর তা বুঝিয়ে বলুন। তাদের কোন ভুল বা লজ্জার বিষয়গুলোকে অন্যদের সামনে বলবেন না। ফলাফল যা কিছুই হোক তাদের যেকোন পরিশ্রম ও প্রচেষ্টাকে সম্মান করুণ। মনে রাখবেন, ফাঁকা প্রশংসা শিশুদের মাঝে ভ্রান্ত আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করতে পারে তাই যেকোন কাজে তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টাকেই মূল্যায়ন করুণ।

৯। তাকে ছোট ছোট গঠনমূলক কিছু কাজ স্বাধীনভাবে করতে দিন। শিশুটি যেন আত্মবিশ্বাসী হতে পারে এবং বাস্তব কিছু অর্জন করতে যে সে সক্ষম এমন মানুষিক শক্তি অর্জনে তাকে অনুপ্রাণিত করুণ।

Action Step:
শিশুর পড়ার টেবিলে স্বচ্ছ একটা জার রাখুন আর তার প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোকে একটা রঙ্গিন কাগজে লিখে জারের মধ্যে জমা করতে উৎসাহিত করুণ। এভাবে ধীরে ধীরে তার অর্জনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং শিশুটি আরও ভাল কিছু অর্জন করার জন্য মননশক্তি অর্জন করবে।

১০। ভিডিওচিত্রগুলো শিশুদের মনোবিকাশকে চিত্রের পরিচালক ও কলা কুশলীদের ব্যক্তিগত চেতনার মাঝে আটকে দিয়ে শিশুদের অন্তরের সক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করে দেয় ফলে তারা কল্পনাশক্তি, স্মৃতিশক্তি ও বিমূর্ত বিষয়ের বিশ্লেষণী শক্তিতে দুর্বল হতে থাকে । তাই, অপ্রয়োজনীয় কোন প্রকার ভিডিওচিত্র দেখা, স্মার্ট ফোনের ব্যবহার, ও টি ভি দেখার মত অভ্যাস হতে শিশুদের দূরে রাখতে নিজেরাও এসব কিছু থেকে যথা সম্ভব দূরে থাকুন।

Action Step:
সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য পারিবারিক পরিবেশে একটা সুন্দর শৃঙ্খলা গড়ে তুলুন। টিভি দেখা ও ইউটিউব ভিডিও দেখা হতে যথাসম্ভব নিজেরাও বিরত থাকুন বরং সময় পেলে বই পড়ার অভ্যাসে অভ্যস্ত হোন। শিশুরা বড়দেরই অনুকরণ করে তাই শিশুর জীবনকে আপনি যেমন দেখতে পছন্দ করেন নিজেরাও তেমন অভ্যাস গঠন করুণ। বিমূর্ত বিষয় যেমন, meaning of good life, success elements of proud life, patriotism, social responsibilities, ইত্যাদি বিষয়ে তাদের চিন্তা ও কল্পনার ক্ষেত্র সৃষ্টি করুণ। সন্তানকে সাথে নিয়ে কিছু কিছু সামাজিক ও বদান্যতামূলক কাজ করুণ। আপনার শিশুকে সাথে নিয়ে গরীব মানুষদের সাহায্যমূলক কিছু কাজে কাজে অংশ নিন।

১১। কোন কাজের প্লান করার সক্ষমতা ও সেসব প্লান বাস্তবে রুপদানের সামর্থ্য যে কোন সফল জীবনের লক্ষ্য পূরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । শিশুদের বয়স যখন ১০ পেড়িয়ে যায় তখন থকেই তাদেরকে কিছু কিছু কাজ স্বাধীন ভাবে পরিকল্পনা করতে দিন। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য তাকে উৎসাহ দিন তা হতে পারে স্কুলের ফুটবল খেলায় জেতার জন্য কোন গেইম প্লান কিংবা ভাল টিম গঠন করার জন্য উপযুক্ত খেলোয়াড় নির্বাচন করা। যে কোন ঊতসবের সময় তাদের কে কিছু বাজেট দিয়ে নিজেদের কেনাকাটার প্লান করতেও আপনি উৎসাহ দিতে পারেন এবং সেসব প্লান গুলোর দুর্বলতা গুলো নিয়ে আপনি তাদের সাথে আলোচনা করে আরও উন্নত পরিকল্পনা করার ব্যাপারে তাদের সাহায্য করতে পারেন।

১২। সন্তান কে তত টুকুই আনন্দ উপকরণ সরবরাহ করুন যেটুকু পেলে তাদের স্বপ্ন জীবিত উজ্জীবিত থাকবে। পানি যেমন বৃক্ষের জীবন বাঁচিয়ে রাখতে অত্যন্ত জরুরী অথচ সেই পানির আধিক্য গাছের মৃত্যুর কারণ হয় তেমনি আপনি যদি শিশু দের চাহিদা পূরণে সতর্ক না হন এবং তাদের কে খুশি করতে নানা উপকরণ জগাতে দিন পার করেন তবে সম্ভবত তারা নিজেদের জীবনের মৌলিক স্বপ্ন টি হারিয়ে ফেলতে পারে।

Show More

Student Ratings & Reviews

No Review Yet
No Review Yet